Logo

রাজনীতি    >>   প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলার পর প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক শেষে তিনি এই ঘোষণা দেন। তিনি আরও জানান, ইজতেমার নির্ধারিত তারিখ অপরিবর্তিত থাকবে এবং সরকার চায় দুই পক্ষ আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করুক।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে সাদ ও জুবায়েরপন্থি তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন এবং প্রায় ৩৫ জন আহত হন। নিহতরা হলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখানের বেলাল (৬০), এবং বগুড়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (৬৫)। আহতদের মধ্যে অনেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মধ্যরাতের সংঘর্ষের পর থেকেই সাদপন্থিরা টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠের দখল নেয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‍্যাব মোতায়েন করে।

সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে তিনি সবাইকে মাঠ ছেড়ে দিতে এবং উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে যে প্রাণহানি ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।"

বৈঠক শেষে হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হক অভিযোগ করেন, "সাদপন্থিরা ঘুমন্ত অবস্থায় জুবায়েরপন্থিদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। এটি সংঘর্ষ নয়, এটি একতরফা আক্রমণ।" তিনি সাদপন্থিদের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

সাদপন্থিরা জানায়, তারা সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী মাঠ ছেড়ে দিতে রাজি। তবে তারা জুবায়েরপন্থিদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ অস্বীকার করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ ইতোমধ্যে উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

জুবায়েরপন্থিরা ১৯ ডিসেম্বর টঙ্গী অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল। তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের এই কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইজতেমার মাঠ দখল ও নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের ফলেই এই সংঘর্ষের সৃষ্টি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেছেন, দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে।